স্টাফ রিপোর্টার –
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যানবাহন থেকে দীর্ঘ মাস ধরে অবৈধ ভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে । পৌরসভার সামনে টোল/চাঁদা আদায় কার্যক্রম চললেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোন নজরধারী।
জানা গেছে,দেশের সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ এলাকার সড়ক-মহাসড়কে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে বাস-ট্রাকসহ সব ধরনের পরিবহন থেকে টোল আদায় না করতে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা জারি করে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়।টোল আদায় বন্ধ না হলে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নামে টার্মিনালের বাইরে দেশের বিভিন্ন রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বাস, ট্রাকসহ যন্ত্রচালিত সব পরিবহন থেকে টোল (চাঁদা) আদায় বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান ও রুল জারি করে হাইকোর্ট ।টার্মিনাল ছাড়া টেন্ডার হয়না। আর টেন্ডার ছাড়া টোল আদায় করা যায় না।পৌরসভা বিধানের ৯৮ ধারার ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে শুধুমাত্র পৌর মেয়রের নির্মিত টার্মিনাল ছাড়া পার্কিং ফির নামে টোল আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ।মেয়র মনির উদ্দিন কোন নির্দেশনা না মেনেই দিগপাইত-তারাকান্দি-সরিষাবাড়ী প্রধান সড়কে চলাচলকারী পৌরসভার সামনে আবার কখনো ট্রাক পরিবহন মোড় কখনো আবার বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোটেম্পু, অটোরিকশা,অটোবাইক. সিএনজি, ট্রলি, জেএসএ, নছিমন, করিমন, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাক গতিরোধ করে স্টীলের লাঠি নিয়ে ফির রশিদ দিয়ে ১০ টাকা, ২০টাকা ও ৫০টাকা টোলের নামে প্রতি মাসে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে । টোল আদায়ের কারণে প্রায়ই টোল আদায়কারীদের সঙ্গে যানবাহন চালকদের বাগ্বিতণ্ডা ঘটনাও ঘটছে। এতে সময় কেটে যায় ২০-৩০ মিনিট। এ সময়ে যানজট লেগে যায়। টোল আদায়ের কারণে পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকদের এবং অটো চালক, ফাইটার, নসিমন চালকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে ।উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টোল/চাঁদাবাজি বন্ধে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান ও জামালপুর জেলা ও সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং বর্তমান সরকারে সু-দৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন এবং যানবাহন চালকরা।প্রকাশ থাকে যে , উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন সহ প্রায় ৭/৮ হাজার অটোবাইক আছে বলে জানা যায়।বিভিন্ন জায়গা থেকে অটোরিক্সা,অটোবাইক ও অটোভ্যান আসলেই তাদের কাছ থেকে লাইসেন্স বাবদ ২ হাজার ৫০ টাকা ও অটো ভ্যান থেকে লাইসেন্সের নামে ১ হাজার ১শ টাকা করে নিচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনার ঝড়।পৌর এলাকার অটো রিক্সা চালক মো: সুমন বলেন, এক বছরের জন্য লাইসেন্স বাবদ ২ হাজার ৫০ টাকা করে নিচ্ছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। ডোয়াইল গ্রামের নছিমন ড্রাইভার শামছু ও মাদারগঞ্জের মালবাহী ট্রাক ড্রাইভার ওয়ারেস , জামালপুরের অটো চালক সুরুজ,তারাকান্দির ট্রাক চালক রুমনসহ আরোও অনেকে জানান, বিভিন্ন যানবাহন থেকে সরিষাবাড়ী পৌরসভার সামনে টোলের নামে পৌর এলাকা দিয়ে চলাচল কারী ছোট-বড় সকল যানবাহন হতে টোল আদায় করা হচ্ছে। আর এখানে কোন যানবাহন পার্কিং করে না।প্রকাশ্যে যানবাহন দাঁড় করিয়ে রশিদের মাধ্যমে টোল নেওয়ার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে প্রতি নিয়ত ড্রাইভার ও সাধারণ যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করছে এমনকি যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চাঁদা আদায়ের জন্য স্টীলের লাঠি নিয়ে বেশ কয়েক জন লোক সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
কথা হলে বাউশী এলাকার অটো চালক রুবেল জানান, ভাই দীর্ঘদিনের পৌরসভা। রাস্তা ঘাট উন্নয়ন না করেই যদি টোল আদায় করে এটা আমাদের জন্য চাপ হয়ে যায়। আর তা ছাড়া অটো লাইসেন্স করতেও ২০০০ টাকা নেয় পাশাপাশি ৫০ টাকা ফরম। কিছু বলার নাই ভাই, গরীবের ওপরই সব কিছুতেই চাপ হয়। দীর্ঘদিন লকডাউন ছিল, আয় করতে পারি নাই। এখন আর কি করার। কথা হলে সরিষাবাড়ী পৌরসভার সচিব আবু সাইদ জানান, এটি পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত। পৌর ট্যাস্ক ও পৌর আদায় বাড়ানোর জন্য টোল আদায় করা হচ্ছে। আমরা সামনে ইজারা দিয়ে দিব৷ সরিষাবাড়ী পৌর মেয়র মনির উদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কথা হলে জামালপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কবির উদ্দীন এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে বলেন, বিষয়টি অবগত হলাম। আপনি সচিবকে জিজ্ঞেস করুন,কোন আইনে তারা টোল আদায় করতেছে৷
Leave a Reply