মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, ১০:৫১ অপরাহ্ন
সোহাগ হোসেন
কথা ছিল পড়াশুনা শেষ করে ভালো চাকুরি করে মধ্যবিত্ত বাবা-মার স্বপ্ন পুরণ করবেন রাশেদুল। কিন্তু মরণব্যধি ক্যান্সার সবশেষ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কাছে তাদের বাবা-মার স্বপ্ন হার মানলো। মাত্র ৩০ বছর বয়সে চলে যেতে হলো পরপারে রাশেদুলের। দীর্ঘ ৩ বছর ধরে মরনব্যাধী ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন মাদারগঞ্জ পৌরসভাস্থ জোনাইল পুজাঘাটি এলাকার আব্দুর সামাদ এর একমাত্র পুত্র ও সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ বাংলা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী ছাত্র মোঃ রাশেদুল ইসলাম।গতরাত আনুমানিক ২টার দিকে ভারতের চেন্নাই এর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার জেনি । এর আগে প্রায় ৩ বছর আগে মরনব্যধি ক্যান্সার রাশেদুলের শরীরে বাসা বাধে। মধ্যবিত্ত বাবার সন্তান রাশেদুলের চিকিৎসা চলতে থাকে কোনমতে। জমানো টাকা – পঁয়সা শেষ করে, সোনা দানা সবশেষ বাড়ি ভিটের একাংশ জমা বিক্রি করেও চলতে থাকে তার চিকিৎসা। সব যখন শেষ হয়ে যায়, তখন ফেসবুকে চলে সাহায্যের আবেদন। মানুষের সাহায্যের অর্থ দিয়ে চলে তার চিকিৎসা। মাঝখানে কিছুটা উন্নতি হলেও অর্থের অভাবে নিয়মিত চিকিৎসা না হওয়ায় নতুন করে শরীরে জেগে উঠে ক্যান্সার। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কয়েকমাস আগে রাশেদুল তার নিজের ফেসবুক একাউন্টে লিখেন আমি যদি অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাই, তাহলে দেশের খুব কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু আমার পরিবারের জন্য বিশাল ক্ষতি হবে। এ দেশে অনেক তো বিত্তবান মানুষ রয়েছেন। আপনারা কি পারেন না আমার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। পরে সকলের সাহায্যে শুরু হয় আবার চিকিৎসা, উন্নত চিকিৎসার জন্য কয়েকমাস আগে তাকে ভারতের চেন্নাই এর একটি ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থা কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় রাশেদুল। তখন অবস্থা হতে থাকে বেগতিক। সেখানে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে চলতে থাকে তার চিকিৎসা। অবস্থার অবনতি হলে কয়েকদিন ধরে তাকে নীবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র( আইসিইউ)এ স্থানাস্থর করা হয়। প্রতিদিন গুণতে ৪০ হাজার রূপি। অর্থের ঘাতটি দেখা দিলে,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাওয়া হয় সাহায্য। অবশেষে শত ব্যাথা, ক্ষোভ, দুঃখ নিয়ে মরনব্যাধি ক্যান্সার ও প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কাছে হার মানে রাশেদুলের জীবন।
Leave a Reply